বিশ্ব শ্রবণ দিবস

বিশ্ব শ্রবণ দিবস

আজ বিশ্ব শ্রবণ দিবস, এবারের প্রতিপাদ্য ‘যত্নের সঙ্গে শুনুন, জীবনভর শুনুন’
ছবি: শ্রবণশক্তি হ্রাস

আজ বিশ্ব শ্রবণ দিবস, শ্রবণজনিত অনীহা নিয়ে সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। শ্রবণ বা শোনা দৈনিক স্বাভাবিক জীবন যাপনের জন্যে খুবই জরুরি তা বলাইবাহুল্য। আমরা যদি ঠিক করে শুনতে না পাই তাহলে জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
 আর এই সমস্যা শুধু ভুক্তভোগীর হবে এমনটা নয়, কেউ যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছে আর সেটা বারবার বলতে হলে যে বলছে সেও বিরক্ত হবে আর যার শোনার সমস্যা সেও বিরক্ত হবে। তাই জ্ঞাপনের ক্ষেত্রে, স্বাভাবিক জীবনযাপন দু দিক থেকেই দেখতে গেলে শুনতে পারার ক্ষমতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০৫০ এর মধ্যে প্রায় প্রত্যেক চার জনের মধ্যে এক জনের শ্রবণ জনিত সমস্যার সম্মুখীন হবে বলে অনুমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার।

৩ মার্চ, আজ বিশ্ব শ্রবণ দিবস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) উদ্যোগে বরাবরের মতো এবারো দিবসটি সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। ‘To hear for life, listen with care’ অর্থাৎ ‘যত্নের সঙ্গে শুনুন, জীবনভর শুনুন’। এ প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আজ ৩ মার্চ পালিত হচ্ছে দিবসটি। বিশ্বব্যাপি ক্রমবর্ধমান শ্রবণপ্রতিবন্ধী বা শ্রবণহ্রাসসহ শ্রুতিহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচও-র উদ্যোগে ২০০৭ সালের এই দিনে প্রথমবারের মতো পালিত হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার কেয়ার ডে’ বা আন্তর্জাতিক কর্ণ যত্ন দিবস। তখন শব্দদূষণকে শ্রবণ হ্রাসের প্রধাণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের জন্য প্রচারণা চালানো হতো। কানের বহিরাংশ না বহিকর্ণ দেখতে ইংরেজি সংখ্যা তিন বা থ্রির মতো। তাই ইংরেজি বছরের তৃতীয় মাস অর্থাৎ মার্চ মাসের তৃতীয় দিনকে বিশ্ব কানের যত্ন দিবস হিসেবে পালন করার জন্য বলা হয়েছে।

ব্যক্তিগত বা সামাজিক যোগাযোগের জন্য মানবদেহের প্রধান অঙ্গ হলো কান। জন্মের পরে কোনো কারণে কানে না শুনলে শিশু কথা বলতে পারে না বা শেখে না। তারা জন্মগত শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে যায়। আবার কোনো কারণে কানে শোনা ব্যাহত হলে বা শ্রবণশক্তি হ্রাস পেলে মানুষের একে অপরের মধ্যে যোগাযোগ ক্ষমতায় ব্যত্যয় ঘটে। তাই কানের যত্ন নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৫ শতাংশে বেশি অর্থাৎ ৩৬০ মিলিয়ন মানুষ শ্রবণে অক্ষম। বংশগত কারণ, জন্মগত জটিলতা, নির্দিষ্ট সংক্রামক রোগ, ক্রনিক কানের সংক্রমণ, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, অত্যধিক শব্দ এবং বার্ধক্যজনিত কারণে সাধারণত শ্রবণশক্তি হ্রাস হয় বা শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শ্রবণশক্তি হ্রাসের বিষয়ে মনোযোগের অভাবে বিশ্বব্যাপী ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক খরচ হয় যা ক্ষতিগ্রস্তদের জীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। বিশ্বে ৪৬৬ মিলিয়ন মানুষের শ্রবণশক্তি হ্রাস হয় যাদের মধ্যে ৩২ কোটি শিশু। অথচ এই শিশুদের শ্রবণশক্তি হ্রাস বেশিরভাগই প্রতিরোধযোগ্য। শৈশবে শ্রবণ শক্তি হারানোদের ৬০ ভাগই প্রতিরোধযোগ্য। আর যারা শ্রবণশক্তি হারিয়েছেন তারা প্রাথমিক সনাক্তকরণ এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জানিয়েছে, আনুমানিক ৪৬৬ মিলিয়ন মানুষ শ্রবণহ্রাস নিয়ে বেঁচে আছেন। সঠিক ও সময়োপযোগী ব্যবস্থা না নিলে ২০৩০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৬৩০ মিলিয়ন। তাই আগামী বছরগুলোতে এই বিপুলসংখ্যক শ্রবণশক্তি হ্রাস ঠেকাতে যথাযথ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহন, শ্রবণশক্তি হ্রাসকারীর প্রয়োজনীয় পূনর্বাসন সেবা এবং যোগাযোগ সরঞ্জাম সহজভাবে নিশ্চিত করা জরুরি।

This site is underconstruction...